এবিএনএ : পিলখানা বিদ্রোহের দিন বেগম জিয়ার ভূমিকা নিয়ে নানামহলের প্রশ্ন আছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘এ বিদ্রোহের পেছনে যারা কলকাঠি নেড়েছিল, তাদের বিচারের জন্য বেগম খালেদা জিয়াসহ সেসব বিষয় তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে টিভি নাট্যপরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সঙ্গে বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্য শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১১তম বার্ষিকীতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের সাথে যারা সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেবের কথা শুনে মনে হয়, পেছনের কলকাঠি পরিচালকদের বিচারের জন্য বেগম খালেদা জিয়াসহ সেসব বিষয় তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ এ বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন ভোরবেলা বেগম খালেদা জিয়া তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। আর সেই রাতে এবং দিনে তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ৪০ বারের বেশি ফোনে কথা বলেন। এই রহস্য উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।’
‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য প্রথমত আদালত ও বিচারের প্রতি কটাক্ষ, দ্বিতীয়ত তার দাবি অনুসারে আরও অধিক তদন্তের মাধ্যমে বেগম জিয়া যিনি সকাল ১১টার আগে ওঠেন না বলে প্রচলিত, তিনি কেন প্রত্যূষে উঠে চলে গেলেন, তার পলাতক পুত্রের সঙ্গে এতবার কথা বললেন তা তদন্ত করে বিচার হওয়া প্রয়োজন’, বলেন ড. হাছান। সময় পিলখানা বিদ্রোহের বিচারকে সমসাময়িক বিশ্বে বৃহৎ বিচারকাজের এক অনন্য নজীর হিসেবে অভিহিত করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এতবড় ঘটনা নিয়ে এতগুলো স্বাক্ষী সম্বলিত বিচার কার্য পৃথিবীর ইতিহাসে কম হয়েছে। আদালতের নির্দেশানুযায়ী সে কাজে সরকার সহযোগিতা করেছে এবং আদালতে রায় হয়েছে। রায়ের প্রেক্ষিতে যারা অভিযুক্ত হয়েছেন তারা সাজাভোগ করছেন।’
‘আর বিএনপি সবকিছুতেই ভুলত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি নিয়ে আদালতের সাথে দ্বিমত পোষণ, আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন, তারেক রহমানের শাস্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলা, আদালতের রায়কে কটাক্ষ করে কথা বলা, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দেওয়া, আন্দোলনের অপচেষ্টা করা এই কাজগুলো বিএনপি ক্রমাগতভাবে করে আসছে’, বলেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় পুরানো ঢাকায় দু’জনের বাড়ি থেকে অবৈধ অর্থ উদ্ধার এবং ‘পাপিয়া’র গ্রেপ্তার ও তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্রব সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘যুব মহিলা লীগের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তির বিষয়ে যুব মহিলা লীগ থেকে ইতিমধ্যেই বক্তব্য দেওয়া হয়েছে ও তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগে কিছু অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে এবং সেই অনুপ্রবেশকারীদের অনেক সুযোগসন্ধানী অপকর্মের সাথে যুক্ত।’
তিনি বলেন, ‘সেই সুযোগসন্ধানীরা তাদের অপকর্ম ঢাকতে রাজনৈতিক ঢাল ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। এদেরকে খুঁজে বের করে সংগঠন থেকে বের করে দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কেউ কোথাও ধরা পড়লেই তাকে আওয়ামী লীগের নেতা বানানোর বাতিক সঠিক নয়।’ ডিরেক্টরস গিল্ড সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলুর নেতৃত্বে বৈঠকে যোগ দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, সহসভাপতি শহীদ রায়হান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন হোসেন, কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য আরিফ আল আহনাফ ও ইসমাইল আহমেদ তালুকদার অয়ন প্রমুখ। এ সময় তথ্যসচিব কামরুন নাহারও উপস্থিত ছিলেন।
Share this content: